লক্ষ্মীর পা

আমার জীবনে কোনদিনই কোন তুলসীতলা ছিল না। আমার আঙিনায় শাদা চালের গুঁড়ো দিয়ে কোনদিন কেউ কোন লক্ষ্মীর পা আঁকে নি।

তবু জানি না কেন তুমি ভাবলে আমার অনেক মঙ্গল দীপ চাই। মাটির বদলে নিজের শরীরের পোড়া মাংস দিয়ে প্রদীপ গড়লেঘি খুঁজে পেলে না বলে বুকের রক্ত ঢাললে তাতেচোখের চামড়া দিয়ে সলতে বানিয়ে আমার চার পাশে হাজার প্রদীপ জ্বেলে ভাবলে আজ হয়ত দেবী আস্তার্তের মন্দির দীপাবলির আলোতেই ভেসে যাবে - সন্ধ্যাবেলা। সেও কি হয় নাকি কখনো

প্রদীপের সেই আগুন প্রথমে আমার পায়ের নখে লাগল। তারপর বুকে। যখন চুল পর্যন্ত আগুন জ্বলে উঠলআমি তো কোন সীতাই হতে পারলাম না। শুধু মাটি দু’ ফাঁক করে সব সিঁড়ি বেয়ে বেয়ে পাতালে নামতে থাকলাম।  

সীতা যেভাবে গয়না ফেলতেফেলতে চলেছিলোআমিও আমার হাত ছুঁড়ে ফেললামআর পা নেই। হৃৎপিন্ড আছড়ে পড়ল পৃথিবীর সেই সব সমুদ্র আর পাহাড়ের খাঁজেখাঁজে – সাপের খোলসের মত। আত্মাও হারিয়ে গেল। শুধু আত্মার গন্ধটুকু আমি প্রণাম করবার মত দুহাত  জড়ো করে সেই হাতের ভাঁজে রাখলাম।  

সত্যি বড় ভয় করছে আমার এখনহয়ত হাত দুটো অল্প একটু ফাঁক করলেই সেই গন্ধটুকুও প্রজাপতির মত আজ দক্ষিণের সূর্যের দিকে উড়ে চলে যাবে। 

উত্তরের এই বরফে আমি তখন শুধু বসে থাকব - একা।


আঁঁকা - কল্যাণী রমা

Comments

Popular Posts